শিরোনাম

মুস্তাফিজবিহীন দিল্লির বড় পরাজয়ে আইপিএল শুরু

দাঁত ভালো রাখার কার্যকরী উপায়

আপডেট: ০৫ অগাস্ট ২০২১, ০১:২১

দাঁত আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিন্তু প্রায়ই আমরা এর অবহেলা করে থাকি যার ফলে দাঁত হারানোসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। নিয়মিত ব্রাশ না করায় দাঁতে পাথর জমা বা গাম তৈরি হওয়ার মূল কারণ। দাঁতের যত্নে করণীয়গুলো জেনে নেয়া যাক।

ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম ইকবাল হোসেন বললেন, ‘দাঁতের সুস্থতায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দাঁত ব্রাশ করা, মাড়ি মালিশ করা আর ভালোভাবে কুলকুচা করা, দাঁতের পরিচ্ছন্নতায় এই তিনটি অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রতিবার খাবার পর দাঁত ব্রাশ ও কুলকুচা করতে হবে। খাবারের কণা যেন লেগে না থাকে, সেটি নিশ্চিত করতেই এসব অভ্যাস। সুস্থতার জন্যই এসব কাজে আলসেমি চলবে না। আগেকার দিনে টুথব্রাশ ছিল না, তখনকার মানুষ মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। তাঁদের দাঁতও সুস্থ থাকত। তবে আজকের দিনে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বেশি গ্রহণযোগ্য উপায় হলো টুথব্রাশ ব্যবহার।

 

আলতো করে দাঁত মাজুন
দাঁত মাজার সময় জোরে জোরে ব্রাশ ঘষলেই দাঁত বেশি পরিষ্কার হবে—বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। বরং জোরে জোরে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হতে পারে। কেবল সামনে-পেছনে ব্রাশ না টেনে ব্রাশটা মাড়ির সাপেক্ষে ৪৫ ডিগ্রি কোণে রেখে দাঁত মাজুন। আর অবশ্যই দুই-তিন মাস পর পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। ব্রাশের ফাইবারগুলো বেঁকে যাওয়ার পরও তা ব্যবহার করতে থাকলে মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। সম্ভব হলে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী নরম, মাঝারি বা একটু শক্ত ব্রাশ বেছে নিয়ে তা ব্যবহার করুন।

ঘুমের আগে বাড়তি যত্ন
রাতে ঘুমানোর আগে আঙুলের সাহায্যে মাড়ি মালিশ করার জন্য ১-২ মিনিট সময় বরাদ্দ করুন। নিচের পাটির মাড়ি মালিশ করুন নিচ থেকে ওপরের দিকে, ওপরের পাটি করুন ওপর থেকে নিচের দিকে (যে নিয়মে দাঁত ব্রাশ করা হয়)। মাড়িতে ছোট পকেটের মতো যে স্থানে দাঁত থাকে, সেখান থেকে খাবারের কণা বা ময়লা বেরিয়ে যাবে। মাড়িতে পর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালন হবে।

অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ
এমন একটা মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন, যা অ্যালকোহলমুক্ত। বাজারের বেশির ভাগ মাউথওয়াশেই বেশ খানিকটা অ্যালকোহল থাকে বলে এসব ব্যবহারে সাময়িকভাবে মুখের টিস্যু শুষ্ক হয়ে যায় এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া যেনতেন মাউথওয়াশ বেশি মাত্রায় ব্যবহার করলে মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলেও ধারণা করা হয়েছে কোনো কোনো গবেষণায়। তাই এ বিষয়ে সচেতন হন।

কুলকুচার নিয়মকানুন
কুলকুচা করার জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। এটি জীবাণুরোধী দ্রবণ হিসেবে কাজ করবে। এর বিকল্প হিসেবে কাজ করে জীবাণুরোধী মাউথওয়াশ (সমপরিমাণ মাউথওয়াশ ও স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির মিশ্রণ)। অফিসে বারবার পানি গরম করার সুযোগ না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে অফিসেই মাউথওয়াশ রাখতে পারেন। যেকোনো খাবার খাওয়ার পরই ভালোভাবে কুলকুচা করুন।

খাদ্যাভ্যাস দাঁত
দাঁতে আঠার মতো আটকে থাকে এমন খাবারের কারণে দাঁতের ক্ষতি হয় সহজে। আধুনিক জীবনের খাদ্যাভ্যাস দাঁতের জন্য অস্বাস্থ্যকর। চকলেট, চুইংগাম, বিস্কিট, ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, কোমলপানীয়—যত দূর সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। শক্ত খাবার, আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন ফলমূল) প্রভৃতি খাওয়ার অভ্যাস করুন। আরও একটি বিষয় জাঙ্ক ফুড খাওয়া ও কোল্ড ড্রিংক পান করা। নিয়মিত কোল্ড ড্রিংক দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে থাকে। স্টিকি ফুড বা জাঙ্ক ফুড খেলে ক্যাভিটির আশঙ্কাও বাড়ে বহুগুণে।


দুই বেলা দুই মিনিটের নিয়ম

প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত মাজুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। মনে রাখুন, এই দাঁত মাজাটা যেন দুই মিনিটের কম সময়ে না হয় আবার বেশি সময় ধরেও না চলে। দাঁত ও মাড়ি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে, ব্যাকটেরিয়া ও দাঁতের প্লাক দূর করতে এ সময়টা দরকার। কিন্তু বেশি সময় ধরে দাঁত মাজাও বিপজ্জনক। সময় ঠিক রাখতে ঘড়ি ব্যবহার করতে পারেন বা দুই মিনিটের কোনো গান বা মিউজিক ট্র্যাক বাছাই করে নিয়মিত তা শুনতে শুনতে দাঁত মাজতে পারেন।